Friday, June 25, 2021

সুভাষ - হিটলার স্বাক্ষাৎ - গল্প নয়, ইতিহাস কি বলছে? 

(হিটলারের সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণের ৮০তম বর্ষ উদযাপিত হচ্ছে কারণ সেটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল নাৎসি জার্মানির শেষের শুরু। এই প্রসঙ্গে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর মতামত বেশ ইন্টারেস্টিং। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেয় )

২৯শে মে, ১৯৪২। বার্লিন। রাইখ চ্যান্সেলারি (জার্মানির সর্বাধিনায়কের দপ্তর)।

এডলফ হিটলারের সঙ্গে সুভাষ চন্দ্র বসু'র  প্রথম ও শেষ সাক্ষাৎ। এক বছরের বেশি সময় ধরে সুভাষ দেখা  করতে চেয়েছেন। সত্যি বলতে কি (বাঙালিরা হয়তো মনঃক্ষুন্ন হবে  যাবে জেনেও লিখছি ) হিটলার খুব একটা গা করেনি। কেনই বা করবে? সাহায্য তো চাইতে গেছেন সুভাষচন্দ্র , হিটলার তো নয়।  ইউরোপ জয়ী কে? হিটলার , সুভাষচন্দ্র তো নন।

আর  তাছাড়া, হিটলারের racist ইডিওলজিতে ভারতীয়দের কোনো ভাল স্থান  নেই।হিটলারের লেখা বই, ভাষণ শুধু ইহুদি নয়, স্লাভিক, এশিয়াটিক, আফ্রিকানদের প্রতি বিদ্বেষে ভরা।   ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লেও হিটলার এখনো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে যে ভারত, এশিয়া ও আফ্রিকার কালো আদমিদের জন্যে শেতাঙ্গ শাসনিই ভালো - সে ইংরেজ হোক বা জার্মান।

সুভাষচন্দ্র ঘটনাচক্রে ওখানে গিয়ে পড়েছেন বলে নাৎসিরা কিছু সাহায্য করেছে - আজাদ হিন্দ কেন্দ্র  স্থাপিত হয়েছে আজাদ হিন্দ রেডিও সম্প্রচার করছে , ইন্ডিশ লিজিওন গঠিত হয়েছে (যদিও নেতাজি'র অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও ~১৭০০০ ভারতীয়  যুদ্ধবন্দীর মধ্যে মাত্র ৪০০০ যোগ দিয়েছে) . বলতে পারেন, নাৎসিরা সুভাষকে হাতে রেখেছেন, যদি ওদের  কাজে আসতে পারেন।   কিন্তু, সুভাষচন্দ্র মূল চেষ্টা ছিল এই  যে ১) স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী  সরকারকে হিটলার আনুষ্ঠানিক সীকৃতি দেবে, ২) সেই অস্থায়ী সরকারের ফৌজ জার্মান ও রুশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় আফগানিস্তান দিয়ে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে প্রবেশ করবে।  সেই ব্যাপারে কাজ খুব একটা এগোয়নি। 

দুঃখের বিষয়, জার্মানি পৌঁছোবার কয়েক মাস পরেই যখন সুভাষ জানতে পারেন যে  হিটলার সোভিএট্ ইউনিয়ন আক্রমন করেছে তখনই তিনি বোঝেন যে আফগানিস্তান দিয়ে তাঁর ঢোকার রাস্তা বন্ধ (নাৎসিরা  লাল ফৌজের ওপর বিজয় নিয়ে নিশ্চিত হলেও ইতিহাস ও রাজনীতির অসাধারণ ছাত্র সুভাষ বুঝতে ভুল করেননি সোভিয়েতরা জার্মানির নাক রগড়ে দেবে !). তাই প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি জার্মানি ছাড়তে চেয়েছিলেন।  যদি জাপানিদের কাছে যাওয়া যায়।   কিন্তু ঠিকঠাক ব্যবস্থা কিছুতেই হয়নি।  
সুভাষ অবশ্য বসে থাকার পাত্র নন; নানা ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। 

আর তার সঙ্গে এখনো চেষ্টা করছেন সেই ১ নম্বর  - স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী  সরকারকে হিটলাররের সীকৃতি। হিটলার দিলেই ইতালি জাপান আর ওদের স্যাটেলাইট দেশগুলি দেবে। 
এবং এই দুই কারণেই - জাপান যাত্রার ব্যবস্থা, আর সরকারকে স্বীকৃতি - জন্যেই আজ হিটলারের সঙ্গে দেখা করতে আসা।  

সুভাষের সঙ্গী দুই বিস্বশ্ত NG স্বামী আর আবিদ হাসান। আর আছেন জার্মান কূটনৈতিক  (ও সুভাষের বন্ধু) আদাম ভন ট্রট, যিনি আজ দোভাষীও বটে ।  জার্মান পক্ষে হিটলার ছাড়া উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিববেনট্রপ এবং সেক্রেটারি কেপলার।  

(হোয়াটসাপে এই সাক্ষাৎ নিয়ে একটা নাটকীয় গাঁজা ঘুরে বেড়ায়। ধ্যাত! ) 

বার্লিনে নেতাজি ও হিটলারের মিটিং। ২৯শে মে, ১৯৪২। পাশে ভন ট্রট। 

যাই হোক, সেই বিখ্যাত ছবি তোলার পরে আলোচনা শুরু।  

সুভাষচন্দ্রই সাহায্যপ্রাথী। তাই হয়তো একটু রং চড়িয়েই হিটলারকে 'সিনিয়র বিপ্লবী ' বলে শুরু করেছিলেন।  তার ফল হল কেলেঙ্কারি। বাতেলা মারার সুযোগ পেয়ে হিটলার একটা লম্বা বক্তৃতা দিয়ে দিলো - যুদ্ধ নিয়ে , পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে, রাশিয়ানদের গালাগাল দিয়ে , ভারতের কি করা উচিত , সুভাষের কি করা উচিত - এক  গাদা !!!  আর এদিকে যে সুভাষচন্দ্র  বন্ধু দিলীপ রায়ের সঙ্গে, গান্ধীজির সঙ্গে, জওহরলাল'র সঙ্গে, এমনকি গুরু চিত্তরঞ্জনের সঙ্গে তর্ক-আলোচনা  করেছেন তাঁর গা জ্বলে গেছে এসব একতরফা  বকবক শুনতে শুনতে। কিন্তু, কি করা!  ট্রট আবার ইশারা করে বলছেন - কোনো কথা নয়।  বকছে , বকতে দাও।  

যাই হোক, ঝাড়া অনেকক্ষন জ্ঞান দিয়ে হিটলার একটু থামতে সুভাষ স্বীকৃতির কথাটা আবার তুললেন। 
হিটলার ঠিক সরাসরি উত্তর দিল না।তবে ঘুরিয়ে যা বলল তার মানে দাঁড়ায়  - না, দেব না, কারণ দেবার কোনো মানে হয় না ।  যদি আমার ফৌজ ভারতের দোরগোড়ায় থাকতো তাহলে আপনাদের স্বীকৃতি দেওয়ার মানে হয়।  আপনাদের দেশে একটা আলোড়ন হতে পারে যেটা  আমাদের লড়াইয়ে কাজ দেবে। কিন্তু, কোথায় আমার ফৌজ আর কোথায় ভারত।এখন দিলে  শুধুমাত্র লোকদেখানো হবে....একটু অপেক্ষা করুন। সোভিয়েতদের  কয়েক মাস পরেই হারিয়ে দেব।  তখন আমরা ভারতের অনেক কাছাকাছি। 

হতাশ হলেও সুভাষচন্দ্র এসব গ্যাস খাওয়ার পার্টিই নন।  উপস্থিত সবাইকে অবাক করে বলে দিলেন, 'সময়ই বলবে আপনারা সোভিয়েটদের কত তাড়াতাড়ি হারাতে পারবেন। ...আর আমার মতে , একসঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম দুই ফ্রন্টে লড়াই করে আপনি ঠিক করছেন না।' 

হিটলারের মুখের ওপর এমন কথা কেউ বলেছে কিনা জানা নেই, তবে হিটলার কথাটা সেদিন খুব একটা পাত্তা দেয়নি। 

সুযোগ পেয়ে সুভাষ আরেকটা বোমা ঝেড়ে দিলেন। বললেন, 'আপনার বই মেইন ক্যাম্পফ'এ আপনি ভারতীয়দের 'দুর্বল, মেনিমুখো, অহিংস ' বলে তাচ্ছিল্য  করেছেন। এ আবার কি - আপনি কি ভারত সম্পর্কে কিছুই জানেন না ? ' 

মুখের ওপর এরকম সমালোচনা শুনে হয়তো অবাক হলেও হিটলার এটাও তেমন গায়ে মাখল না।  একটু পাশ কাটিয়ে বললো, 'আরে , আমি বলছিলাম আপনাদের দেশের অহিংস আন্দোলন যেন জার্মানিতে না হয়...'

যাই হোক, হিটলার নিজের আসল কথাটা ভোলেনি। শয়তান হলেও পোড়খাওয়া রাজনৈতিক।  সুভাষ এরপর যখন ভারতের কাছাকাছি জাপানে যেতে চাইলেন, হিটলার বললেন, 'নিঃশ্চই ব্যবস্থা হবে' 
সুভাষ বললেন - একটা প্লেনের ব্যবস্থা করে দিন'.

হিটলার বললো   - না, প্লেনে যাবার বোকামি করবেন না. কোথায় শত্রু গুলি করে নামবে।  আপনার জীবনের দাম অনেক।  প্লেন নয় , আমি সাবমেরিন (জার্মান ভাষায় U-boat ) দিচ্ছি। আপনি ভাস্কো দা গামার সেই পুরোনো রুট দিয়ে যান - তবে সমুদ্রের তোলা দিয়ে।  

মিটিংয়ের মোটামুটি এই শেষ।  

২ বছর ঝুলিয়ে রেখে নাৎসিরা সুভাষচন্দ্রকে তেমন কিছুই সাহায্য করলো না (তাঁর চেষ্টার শেষ নেই)।  
আর ঐতিহাসিকের দিক থেকে দেখতে গেলে  হিটলার অত  ঘুরিয়েপেঁচিয়ে বকবক করে বললেও যা বলেছিলো ঠিক বলেছিলো। নাৎসিদের স্বার্থ আর পরাধীন ভারতের স্বার্থ তো এক নয়। ( শত্রুর শত্রু  'বন্ধু' হতেও পারে আবার 'অল্প চেনাশোনাও' হতে পারে, তাই না?)   

তবে, সুভাষের সাহসী সমালোচনা শুনেও যে রেগে যায়নি সেটা আমাদের একটু সৌভাগ্যই বলতে হবে।  
সেই মিটিং আজ আমাদের favourite ইতিহাস। তবে, সুভাষের নিজের সে  মিটিং খুব একটা পছন্দ হয়নি। স্বাভাবিক।  তাই হিটলারের দপ্তরের বাইরে অপেক্ষারত স্বামী ও হাসান যখন জিজ্ঞেস করেন, 'নেতাজি, কেমন দেখলেন? হিটলার ব্যাটা বললো কি?' সুভাষ একটু রেগেমেগেই বলেন 'একটা বদ্ধ পাগল। আমাদের আফগানিস্তানের ইপির ফকিরের মত।  নিজেই বকে যায়, সামনের জন কি বললো শোনেই না....এর সঙ্গে ৫ মিনিটের বেশি কথা বলা যায় না কি??!!'

রেফারেন্স 

Brothers against the Raj - Leonard Gordon

His Majesty's Opponent - Sugata Bose

গত বছর এই লেখাটি লিখে হোয়াটসাপে বন্ধুদের পাঠিয়েছিলাম। এখান ব্লগে দিলাম। তিহাসের এই ছোট্ট খবরটি ভালো লাগলে, নতুন লাগলে শেয়ার করবেন।

Thursday, June 24, 2021

অবশেষে প্রকাশিত হল ইংল্যান্ডের সেই নতুন টাকা। কিন্তু তাতে জগদীশ চন্দ্র বসু'র ছবি আছে কি ? .....

দু বছরের বেশি ধরে বাঙালি একে অপরকে ফরওয়ার্ড করে আসছে এই পোস্ট। 'গন ভোটে' ইংরেজরা নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের দেশের নতুন ৫০ পাউন্ড নোটে ছবি থাকবে বিজ্ঞানাচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু'র। বাঙালি খুব খুশি যে 'এতদিন অবহেলিত' মহান বাঙালি বিজ্ঞানীকে অবশেষে কুর্নিশ জানাবে জগৎ সংসার। তাই এই পোস্ট সবাই ফরওয়ার্ড করে ফেসবুক আর হোয়াটস্যাপ সমাজ-মাধ্যম বিশ্বকে সমৃদ্ধ করুন। জয় হে জয় হে জয় হে জয় জয় জয় জয় হে।  

ছবি ১: সমাজ মাধ্যমে যে পোস্ট ঘুরে বেড়ায়।  

অবশেষে সেই দিন এল।  অতিমারীর ডেল্টা ঝাপ্টার দাপটে ইংরেজরা তাদের লকডাউনের মেয়াদ আরো কয়েক সপ্তাহ বাড়িয়ে দিলেও ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড (মানে ওদের দেশের রিসার্ভ ব্যাঙ্কের সমতুল্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক) নতুন ৫০-পাউন্ড'র নোট আনুষ্ঠানিক ভাবে বাজারে আনলেন। সারা পৃথিবীতে খবর ছড়িয়ে পড়ল।  কিন্তু, কি আশ্চর্য! নতুন নোটে জগদীশ চন্দ্র বসু'র ছবি তো নেই ! তাহলে? ছবি আছে আধুনিক কম্পিউটার বিদ্যা'র জনক অ্যালেন টুরিং'র। এবং নতুন নোট রিলিজ হল ২৩শে জুন, অর্থাৎ টুরিং'র ১১০তম জন্মজয়ন্তীতে। এই যে নতুন নোটের ছবি।  

ছবি ২: অ্যালেন টুরিং'র ছবি দেওয়া  নতুন ব্রিটিশ ৫০-পাউন্ড নোট। ( https://www.theguardian.com/money/2021/jun/23/new-50-note-alan-turing-uk-security-features)


অসভ্য ! বদমাইশ! দুস্টু লোক! বেহায়া! সাহেবগুলো আবার আমাদের লেঙ্গি মারল??!!! তাও আবার পলাশীর যুদ্ধের দিন ২৩শে জুনেই !!! [ লিখতে লিখতে খেয়াল হল আজ যেমন সারাদিন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, তেমনি ২৬৪ বছর আগে মুর্শিদাবাদের সেই আমবাগান আর সংলগ্ন মাঠে হেভ্ভি ঝড়বৃষ্টি নেমে 'এডভ্যান্টেজ ক্লাইভ' করে দিয়েছিল। আর তার সঙ্গে তো ছিলই মীরজাফরের 'দলে থেকে মানুষের জন্যে কাজ করতে পারছিলাম না'।]

 তবে এখন যাক সে কথা ! নতুন নোটে বিজ্ঞানীর ছবির কথায় ফেরা যাক। নাঃ! কেউ আচার্য বসুকে জেনেশুনে অপমান করেনি, বাঙালি জাতিকেও লেঙ্গি মারেনি। এই 'পোস্ট পেলেই চোখ-কান বুজে ফরওয়ার্ড করে দিতে হবে' র যুগে আমরাই অতি-উৎসাহী হয়ে মনে রাখিনি যে খবর-টা একবার যাচাই করা উচিত। 

অথচ মূল খবরে কিন্তু গোড়া থেকেই কোন ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ ছিল না।২০১৮র নভেম্বরে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ঘোষণা করেন যে বছর দু-তিনের মধ্যে তাঁরা  নতুন ৫০ পাউন্ডের নোট বাজারে ছাড়তে চলেছেন। পুরোনো কাগজের নোট বাতিল করে নতুন নোট হবে বিশেষ পলিমারের, যেমন এখনকার অন্যান্য সব ইংরেজ টাকা। কিন্তু , তার সঙ্গে ব্যাঙ্ক কর্ণধাররা এও জানান যে এই নতুন নোটে এমন এক বিজ্ঞানীর ছবি থাকবে যিনি শুধু বিজ্ঞানের কোন এক ক্ষেত্রে অসামান্য দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তাই নয়, তাঁর অবদান ব্রিটিশ সমাজকেও না না ভাবে প্রভাবিত করেছে। 

পঞ্চাশ পাউন্ড নোটে বিজ্ঞানীর ছবি অবশ্য নতুন না।  যেমন ২০১১য় প্রকাশিত নোটে আছেন এমন একজন যাঁর নাম আমাদের স্কুলবইতে থাকত -  স্টিম-ইঞ্জিনের আবিষ্কর্তা জেমস ওয়াট।  সঙ্গে তাঁর সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক ম্যাথিউ বোল্টন। 


ছবি ৩: ২০১১র ৫০-পাউন্ড নোটে জেমস ওয়াট ও ম্যাথিউ বোল্টন

তবে এবার উল্লেখযোগ্য ভাবে ব্যাঙ্ক জানায় যে জনসাধারনের মতামতকে তাঁরা গুরুত্ব দেবেন - পছন্দের বিজ্ঞানীর নাম নোমিনেট করার জন্যে ওয়েবসাইট খুলে দেওয়া হয়।  ছয় সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে, তারপর শর্টলিস্ট করবেন বিশেষজ্ঞ কমিটি। 

'বিজ্ঞানের যুগে বিজ্ঞান নিয়ে হুজুগ'  - অনেকটা গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজোর মত।  এবং তাই ছয় সপ্তাহ পরে  কমিটি দেখেন যে ২১৪০০০র ওপর ব্রিটিশ নাগরিক ৯৮৯ জন বিজ্ঞানীর পক্ষে মতামত দিয়েছেন! 

অবাক হবার কিছু নেই। নিউটন, ডারউইন , ফ্যারাডে, জেমস ম্যাক্সওয়েল, আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং, রবার্ট বয়েল, জন ডাল্টন, রাদারফোর্ড,  এডমন্ড হ্যালি'র মত যুগান্তকারী বিজ্ঞানীদের যদি 'ওঁরা এসবের উর্ধে' বলে লিস্ট থেকে বাদ দেওয়াও  হয়, ইংল্যান্ডে কি স্বনামধন্য বিজ্ঞানীর অভাব আছে? আমাদের ওপর দুশো বছর শাসন করেছে বলে আমাদের স্বাভাবিক 'গজগজ খচখচ মানসিকতা' থাকলেও আধুনিক বিজ্ঞানে ও দেশের অবদান তো অনস্বীকার্য। 

মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আসল ব্যাপার হল এই হাজারের ওপর নোমিনেশনে ছিল জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম। এবং এখন থেকেই আমাদের 'আমরা বাঙালি' মাতামাতির শুরু। 

ছবি ৪: জনসাধারনের opinion pollএ জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম। (https://www.bankofengland.co.uk/-/media/boe/files/banknotes/50-character-selection-names.pdf?la=en&hash=F0CCA0655EEC2788748D885BE036662B574B615E)


     এই 'খবর' যখন এখানে এসে পৌঁছল এক অদ্ভুতুড়ে হুজুগ শুরু হল।  একাধিক কাগজে প্রকাশিত হল। পোস্ট লেখা ও শেয়ার শুরু হল।  কেউ কেউ সঠিক রিপোর্টিং করলেও বেশ কয়েকজন বাঙালি আবেগে সুড়সুড়ি দিতে গিয়ে (অথবা সাংবাদিক নিজেই সুড়সুড়ি খেয়ে) ভুল রিপোর্ট বা হেডিং লিখে বসলেন।  পশ্চিমবঙ্গ, জাতীয়, বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যমের কেউ না কেউ এই ভুল করেইছেন । একটি সংবাদমাধ্যম তো আবার ফটোশপ করে ব্যঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের আগেই নতুন নোটের ডিজাইন করে ফেলে অধ্যাপক বসুর ছবি বসিয়ে দিল! এটা ঠিক যে বেশ কিছু ওয়েবসাইট পরে সঠিক খবর নিয়ে আসেন। এমনকি 'জগদীশ নোটের' ডিজাইন করা সংবাদমাধ্যম ও জানায় যে 'বসু নন, নতুন নোটে থাকছেন টুরিং' । কিন্তু ততদিনে যা গণ্ডগোল হবার হয়েই গেছে । আর ফেসবুক বা হোয়াটস্যাপ 'ফালতু' কিছু ঢুকলে সেটা যে ঘুরতেই থাকে সে তো আমরা সবাই জানি ( না হলে আর এই বাজারে ট্রোলদের সংসার চলত কি?)  

ছবি ৫:  ব্রিটিশ পাউন্ডে জগদীশ বসু নিয়ে অতি-উৎসাহী সংবাদ মাধ্যম 

    আচার্য বসুর নাম কে বা  কারা দিয়েছিলেন সেটা হয়ত আর জানা যাবে না, তবে সম্ভবত বিলেতে বসবাসকারী কোন বাঙালিই হবেন। তিনি (বা তাঁরা) ভুল কিছু করেননি। গত ১৫০ বছরে জগদীশ চন্দ্র বসুর মত এক্সপেরিমেন্টাল গবেষক কমই এসেছেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের বাজার-দোকান-ম'লে যে নোট ইংরেজ জনসাধারণ ব্যবহার করবেন (যদিও দৈনন্দিন কাজকর্মে ৫০-পাউন্ড খুব বেশি চলে না) সেখানে  গত শতাব্দীর একজন ভারতীয় বিজ্ঞানী (যিনি জীবনের কয়েক বছর ওদেশে কাটালেও সেখানে থাকাকালীন তেমন কোন বড় গবেষণা করেননি) তাঁর ছবি ওদের দেশে নোটে শোভা পাবে এটা আশা করা একটু বাড়াবাড়ি। কোন সামাজিক-গণ মানসিকতা থেকে এমন 'আশা' উঠে আসতে পারে এবং লক্ষ লক্ষ 'শিক্ষিত' বাঙালির মনে নির্দ্বিধায় প্রতিষ্ঠা পেতে পারে সেটা মনস্তাত্ত্বিকরাই বলতে পারবেন।  তবে 'আমরাই জগতে গ্রেট গ্রেটার গ্রেটেস্ট, কিন্তু আমাদের কেউ পাত্তা দেয়নি ঠকিয়ে নিয়েছে, এইবার পাত্তা দিচ্ছে কারণ আমরাই জগতে গ্রেট গ্রেটার গ্রেটেস্ট... - এই চিন্তা-টা বহু বাঙালির (এবং ভারতীয়দের) মধ্যে মজ্জাগত। আমার মনে হয় এই  'যাক! এতদিনে JC Bose সন্মান পেলেন' গণ-বিশ্বাস এই মনোভাবেরই প্রসূত। 

    কবে থেকে এই মানসিকতার শুরু ঠিক জানিনা। সম্ভবত, প্রাক-স্বাধীনতা যুগে ইংরেজ racism যখন সত্যি সত্যিই এ দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করত তখন সেই হীনবল দাবিয়ে-রাখা জাতিকে উজ্জীবিত করতেই এই সব 'এমন দেশটি কোথাও খুঁজে' 'পাল্টা' স্লোগানের প্রয়োজনীয় উৎপত্তি। তবে আজ স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরেও এগুলো কথায়-কথায় আঁকড়ে ধরে থাকা খুব একটা কাজের মনে হয় না।  তাও করা হতেই থাকে, কেন কে জানে? হয়ত প্রায় এক শতাব্দী অভ্যাসের ফল, অথবা  যেসব কৃতি বাঙালি নিজেদের কর্মক্ষেত্রে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন এই মাতামাতি করে তাঁদের  reflected glory  নিজের অপরেও একটু টেনে এনে ফেলা যায়। আর তার সঙ্গে যখন যোগ হয় এই ধরণের অতি-সরলীকরণ রিপোর্টিং তখন তো জল আরো ঘোলা হবেই?

    তবে আন্তর্জাতিক জগৎ তো এর ধার ধারে না, এক্ষেত্রেও ধারেও নি।  এবং তাই যে ১২ বিজ্ঞানী শর্টলিস্ট হলেন তাঁতে নাম নেই জগদীশ চন্দ্র'র।  অথচ সেটা কিন্তু কোন মতেই ভারত-বিরোধী মনোভাবের কারণে নয়। কারণ, ফাইনাল লিস্টে জোতিষ্ক'র মত উজ্জ্বল এক অকালপ্রয়াত তামিল তরুণ  - শ্রীনিবাস রামানুজন। '১২ জন ফাইনালিস্টদের' মধ্যে তাঁর স্থান কারণ রামানুজনের মত গণিতজ্ঞ বিংশ শতাব্দীতে হাতেগোনা, এবং তাঁর মৌলিক গবেষণার  প্রায় সবই  তিনি ইংল্যান্ডে থাকাকালীন করেছিলেন। কি আশ্চর্য - যে নাম নেই তা নিয়ে লাফালাফি , যে ভারতীয় নাম শর্টলিস্ট হয়েছিল তাঁকে নিয়ে কোন কথা নেই? ?  

ছবি ৬: শর্টলিস্ট হওয়া ১২জন দিকপাল। চোদ্দজন বিজ্ঞানীর ছবি আছে কারণ চার্লস ব্যাবেজ এবং এডা লাভলেস, ও উইলিয়াম ও ক্যারোলিন হার্শেল র ছবি নির্বাচিত হলে একসঙ্গে নোটে শোভা পেত।  

    অবশ্য রামানুজনের ছবি শেষ পর্যন্ত নতুন নোটে স্থান পায়নি। যেমন পাননি আধুনিক জীবন বিজ্ঞানের দুই অসামান্যা  - রোজালিন্ড ফ্র্যাংকলিন আর ডরোথি হজকিন। অথবা দু বারের নোবেল বিজয়ী ফ্রেডরিক স্যাঙ্গার বা সর্বজনশ্রদ্ধেয় স্টিফেন হকিং। নির্বাচিত হননি পদার্থবিদ্যার সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ট জেমস ম্যাক্সওয়েল অথবা পল ডিরাক। একটাই তো নোট - কি আর করা যাবে? তাই , ব্রিটিশ প্রথা ও আইন মেনে নোটের একদিকে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছবি। অন্যদিকে অ্যালেন টুরিং। আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞানের জনক, যন্ত্রের কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্নতা ও আরো কত কিছুর দিশারী - যাঁকে অনেকে আইনস্টাইন, টেসলা, এডিসন বা দা ভিঞ্চির মত প্রতিভাধর মনে করেন - সেই অ্যালেন টুরিং। আর টুরিং তো শুধু বিজ্ঞানতপস্বী নন।  তিনি ব্রিটেনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম বড় নায়ক। যুদ্ধ জয়ে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। কেন? কারণ, ১৯৪২এ জার্মানির এনিগ্মা কোড break করেছিলেন টুরিং ও তাঁর সহকারী বিজ্ঞানীরা। ফলে, পরের দু বছর জার্মানির যাবতীয় গুপ্ত পরিকল্পনা ও নির্দেশ মিত্রশক্তি'র কাছে আগেই পৌঁছে পাঠোদ্ধার হয়ে যেত। ভবিষ্যতের যন্ত্র, আধুনিক যন্ত্রের artificial intelligence থেকে বাঘ ও  জিরাফদের গায়ে কিভাবে নানা ধরণের ডোরাকাটা দাগ বা ছোপ হয় - সর্বত্র টুরিং'র অবাধ বিচরণ। বিজ্ঞানী তো অনেকেই হন, প্রতি বছর নোবেল ও ৭-৮জন পেয়ে থাকেন, কিন্তু শতাব্দীতে সম্ভবত একজনই টুরিং আসেন। 

অ্যালেন টুরিং নিয়ে লেখার তো শেষ নেই।  আর সত্যি বলতে কি, আমি ওঁর বিষয়ের details  অতটা ঠিক বুঝিনা। তাই বেশি লেখা অনুচিত হবে। তবে, নিচে কয়েকটি তথ্য-সমৃদ্ধ পোস্টের লিংক দিলাম। টুরিং সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্য-পাঠ্য। 

তবে,  টুরিং'র ছবি যে আজ ব্রিটিশ পাউন্ডে স্থান পেল এটা শুধু আধুনিক সভ্যতার প্রায় সব কিছুতে তাঁর সব যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবের জন্যে নয়। টুরিং'র ছবি দিয়ে এক ধরণের প্রায়শ্চিত্ত করল ব্রিটিশ জাতি। অসামান্য মেধাবী টুরিং সমকামী হয়ে জন্মেছিলেন। জীবনের বিভিন্ন সময়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্টতা ছিল। কিন্তু, এ জানাজানি হবার পরে আজ থেকে ৭০-৮০ বছর আগের, আজকের-তুলনায় অনেক রক্ষণশীল, ইংরেজ সমাজে তাঁর ঠাঁই হয়নি। বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ে তাঁর অসামান্য অবদান সত্ত্বেও তিনি অপমানিত হন, আইনত অপরাধী সাব্যস্ত হন এবং তাঁকে 'ঠিক করতে হরমোন থেরাপি' দেওয়া হয়।  এই অপমান সহ্য হয়নি। তাই ১৯৫৪'র এক ভোরবেলা সায়ানাইড মেশানো আপেল খেয়ে তাঁর আত্মহত্যা। বয়স মাত্র ৪২! 

    তারপর টেমস দিয়ে কত জল বয়ে গেছে। বিজ্ঞানে প্রায় প্রত্যেক শাখায় টুরিংর আবিষ্কারের প্রভাব বেড়ে চলেছে।  এবং এককালে যা সমাজচ্যুত-করা অপরাধ ছিল তা আজ স্বাভাবিক প্রকৃতি বলে বিজ্ঞান ও সমাজে স্বীকৃত। তাই, টুরিং'র নাম ঘোষণা করার সময়ে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের কর্ণধার জানালেন - বিজ্ঞানের এই যুগে আমরা চাই যেন সবাই উপলব্ধি করেন যে একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় তাঁর গুণাবলী।  তিনি কোথা থেকে এসেছেন, কি তাঁর  মাতৃভাষা, তিনি কোন সমাজের মানুষ, কি তাঁর যৌন্যতা বা তাঁর গায়ের রং কেমন এগুলো আর বিচার্য হতে পারে না।  মানব জাতির কল্যানে কি তাঁর অবদান সেটাই প্রধান ও একমাত্র বিচার্য।  গ্যালিলিও'র মত আজ টুরিং ও বিজয়ী।  

ছবি ৭: ৫০ পাউন্ডের নতুন নোট।  একদিকে রানী, অন্যদিকে তাঁর কিছু আবিষ্কার ও মৌলিক চিন্তাভাবনা শোঃ অ্যালেন টুরিং

    আর জগদীশ চন্দ্র?  ভারতরত্ন বিজ্ঞানী CNR Rao একবার বলেছিলেন 'জগদীশ চন্দ্র হচ্ছেন ultimate scientist. অন্য বিজ্ঞানীরা যন্ত্রপাতি কেমিক্যাল হাতের কাছে পেলে গবেষণা করতে পারেন।  আর জগদীশ চন্দ্র গবেষণা করতেন নিজের হাতে যন্ত্র বানিয়ে'. তাই জগদীশ চন্দ্র আছেন, থাকবেন। আর গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি বহু বাঙালি এখনো অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে বছরের পর বছর ওই 'ইংরেজ টাকায় বাঙালি বিজ্ঞানী' পোস্ট শেয়ার করেই যাবে।ওই যেমন প্রতি বছর ১২ই জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের 'শিকাগো বক্তৃতা' নাম নিয়ে একটা ঢপের রেকর্ডিং  ফরওয়ার্ড হয়ে হয়ে ঘুরে বেড়ায়।স্বামীজীর নাম যা-তা কিছু শেয়ার করলেই যদি দেশপ্রেম ও পুন্য দু পয়েন্ট বাড়ে এই আর কি ! যেমন লোকজন অবলীলায় ভাবতে পারেন যে ভ্যাকসিন নিলে গায়ে চুম্বক হয় এবং দায়িত্ব জ্ঞানহীন হয়ে সেই পোস্ট কিছু সংবাদ মাধ্যম ও সমাজ মাধ্যমে প্রচার ও পেতে থাকে। ....

আর তাছাড়া, জগদীশ চন্দ্র বসু সম্মন্ধে বিভ্রন্তিকর প্রচার তো নতুন কিছু না। এই যে আমরা সব গর্ব করে বলে  বেড়াই, আমাদের স্কুল বইতেও আছে - জগদীশচন্দ্র প্রমান করেছিলেন গাছের  প্রাণ আছে' সেটা কি ঠিক ? সত্যিই কি তাই প্রমান করেছিলেন বসু বিজ্ঞান মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা?  .... হা হা ! সে আরেক অতিসরলীকরণ কাহিনী। আরেকদিন হবে। 

 প্রথমে এই ব্লগে প্রকাশিত। তার একদিন পরে ফেসবুক গ্রুপ 'ইতিহাস তথ্য ও তর্কে' প্রকাশিত।


রেফারেন্স 

https://www.bbc.com/news/business-57554102

https://www.theguardian.com/money/2021/jun/23/new-50-note-alan-turing-uk-security-features

https://www.reuters.com/world/uk/new-british-50-pound-note-with-ww2-codebreaker-turing-enters-circulation-2021-06-22/

https://www.theguardian.com/business/2018/nov/02/new-plastic-50-note-bank-of-england-asks-public-nominate-scientist-ada-lovelace-stephen-hawking

https://www.bankofengland.co.uk/banknotes/50-pound-note-nominations

https://www.bbc.com/news/business-46063097

https://www.bankofengland.co.uk/-/media/boe/files/banknotes/50-character-selection-names.pdf?la=en&hash=F0CCA0655EEC2788748D885BE036662B574B615E

https://www.dailymail.co.uk/news/article-6345913/Bank-England-invites-public-nominate-British-figure-appear-high-tech-currency.html

https://www.independent.co.uk/news/business/news/new-50-note-vote-scientist-stephen-hawking-ada-lovelace-alan-turing-bank-england-a8614026.html

https://www.indiatimes.com/technology/news/new-uk-50-pound-note-may-feature-india-s-sir-jc-bose-who-did-pioneering-work-for-wi-fi-357535.html

https://www.kolkata24x7.com/uk-50-pound-note-may-feature-indias-sir-jc-bose/

https://eisamay.indiatimes.com/nation/jagadish-chandra-bose/articleshow/66818001.cms


https://www.jugantor.com/todays-paper/economics/271367/%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B6-%E0%A7%AB%E0%A7%A6-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1-%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%96


https://www.bbc.com/news/business-56503741

https://twitter.com/c0nc0rdance/status/1400798442360872960

https://www.facebook.com/groups/elebele.org/posts/396716025072451/

https://www.facebook.com/groups/1803711656387813/posts/4092204797538476/




 স্কুল খুলুক, সঙ্গে হাওয়া বাতাস খেলুক ক্লাসঘরে ('এই সময়' সংবাদপত্রে প্রবন্ধ -  ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২১)      সোজাসাপ্টা অপ্রিয়   সত...