Tuesday, July 21, 2020

অক্সফোর্ড আর ক্যানসাইনো - দুই ভ্যাকসিনের গল্প 

এপ্রিল মাসে দেখা সেই ছবিটা মনে আছে? অক্সফোর্ডের গবেষণাগারে তরুণ বিজ্ঞানী ডঃ এলিসা গ্রান্টও-কে  পরীক্ষামূলক টিকা দেবার সেই ফটো ? সেদিন সবার মুখে  এলিসার প্রশংসা। তবে তিনি প্রথম হলেও একা ছিলেন না; গতকাল এলিসা ও আরো ১০০০র বেশি ভলান্টিয়ারের সাহায্য নিয়ে করা গবেষণার ফল প্রকাশিত হল । 

  • Astrazeneca কোম্পানির সঙ্গে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়'র উদোগ্যে তৈরী কোরোনাভাইরাস-বিরোধী ChAdOx1 nCoV-2019 ভ্যাকসিন  বেশ কিছুটা সাফল্য পেল।তাঁদের phase 1/2 পরীক্ষা সফল -   বিখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেটে বিজ্ঞানীরা এমনই জানিয়েছেন। 
অক্সফোর্ড টিকার গবেষণাপত্রের প্রথম পাতার স্ক্রিনশট 
  • পশ্চিম জগতের বেশি প্রচার এবং আমাদের স্বাভাবিক সাহেব-প্রীতি'র জন্যেই সম্ভবত অক্সফোর্ড টিকা নিয়ে এত বেশি কথাবার্তা হচ্ছে মিডিয়ায়। কিন্তু পাবলিক কি খাবে আর কি না খেতে পারে, trp বাড়বে কি বাড়বে না তা নিয়ে তো বিজ্ঞান চলে না।তাই একই দিনে একই জার্নালে প্রকাশিত একই ধরনের আরেকটি গবেষণাপত্রের কথা বলতেই হয়।  চীনা কোম্পানি Cansino Biologics এবং চীনের একাডেমি অফ মিলিটারি সায়েন্স র উদোগ্যে তৈরী পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের phase 2র কাজ হয়েছে  উহান প্রদেশে ; তার সাফল্যের কথা ও জানা গেল।
ক্যানসাইনো টিকার গবেষণাপত্রের প্রথম পাতার স্ক্রিনশট
  • দুই গবেষণার মূল লক্ষ্য দুটি - এক, পরীক্ষামূলক টিকা কি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে নতুন কোরোনাভাইরাসকে আক্রমণ করতে সাহায্য করছে? দুই, টিকা ইনজেক্ট করার পরে কোন গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে কি? 
টিকা কি দিয়ে তৈরী?
  •  সাধারণত, টিকা তৈরী হয় নির্জীব জীবাণু বা জীবাণুর কোন বিশেষ প্রোটিন দিয়ে। আজ অবধি বাজারে আসা সব টিকা তাই হয়ে এসেছে। মলিকিউলার বায়োলজির যুগে সেই প্রচলিত চিন্তা ভাবনা কিছুটা পাল্টে গেছে। অক্সফোর্ড ও ক্যানসাইনো দুই  টিকা এডিনোভাইরাস নামের একটি ভাইরাস দিয়ে তৈরী। এই বিশেষ এডিনোভাইরাস আদতে শিম্পাঞ্জিদের দেহে অসুখ করায়। কিন্তু, টিকা বানাতে বিজ্ঞানীরা এই এডিনোভাইরাসের নিজস্ব কিছু জীন ছেঁটে ফেলেছেন আর ওর মধ্যে কোরোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জীন ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ফলস্বরূপ, এ আর আমাদের শরীরে ঢুকে নিজের বংশ বৃদ্ধি করতে পারবে না, কিন্তু স্পাইক প্রোটিন তৈরী করতে পারবে। কি লাভ? ওই স্পাইক প্রোটিনকে চিনে রাখবে আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আসল ভাইরাস যদি কোনোদিন ঢোকে তখন জটায়ুর ভাষায়, 'ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই'! তবে বললেই তো হবে না।  টেস্ট করতে হবে।
কি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হল ? 
  •  অক্সফোর্ডে প্রথমে রিসাস বাঁদরদের ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে ভাল আন্টিবডি তৈরী হচ্ছে। তাই এবার মানুষ। এপ্রিল আর মে  মাসে লন্ডন, অক্সফোর্ড, সাদামটন, ব্রিস্টল আর ওয়েস্টন এই পাঁচ শহরের হসপিটালে সব মিলিয়ে ১০৭৭ স্বেচ্ছাসেবকের ওপরে পরীক্ষা করা হয়েছে। এঁদের বয়েস ১৮ থেকে ৫৫র মধ্যে (গড় বয়েস ৩৫), নারী পুরুষ ৫০: ৫০ এবং প্রায় সবাই শেতাঙ্গ। 
  • ৫৪৩জনকে এই নতুন ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার প্রথম ইনজেকশন দেবার ২৮দিন পরে ওই ৫৪৩র মধ্যে থেকে বাছাই ১০জনকে একটা বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়।  
  • আর অন্য  ৫৩৪জনকে একটি পুরোনো মেনিনজকক্কাস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই দ্বিতীয় দলকে (৫৩৪) বলে 'কন্ট্রোল গ্রূপ' . নতুন ভ্যাকসিনের প্রভাব ঠিক কি কি সেটা বুঝতে এই কন্ট্রোল গ্রূপ অত্যন্ত গুরুত্তপূর্ণ। 
  • পৃথিবীর অন্য প্রান্তে ক্যানসাইনো'র বিজ্ঞানীরা মার্চ মাসে অল্প সংখ্যক লোকের ওপর প্রথম পর্যায়ের টেস্ট করেছিলেন। ফলাফল সন্তোষজনক হওয়াতে এবার  ৫০০র ওপর সুস্থ ভলান্টিয়ারকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। এঁরা সবাই চীনা, উহান প্রদেশের বাসিন্দা, বয়েস ১৮র ওপরে এবং আগে এঁদের কারুর করোনা ইনফেকশন হয়নি।    
  • ভলান্টিয়ারদের তিন ভাগে ভাগ করে ২৫৩জনকে কম ডোজের টিকা, ১২৯জনকে বেশি ডোজের টিকা এবং ১২৬জনকে প্লাসিবো (এমন এক সলুশন যাতে নির্জীব ভাইরাস ছাড়া টিকার সব উপাদান আছে ) দেওয়া হয়।  
  • দুই ক্ষেত্রেই ১৪, ২৮ ও অন্যান্য দিনের মাথায় পরীক্ষা করা হয় শরীরে এন্টিবডি কেমন তৈরী হচ্ছে আর T cell activation হল কি না।  কোন সাইড এফেক্ট হল কি না তাও নজরে রাখা হয়।
ফলাফল - ১ : পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে ? 
  • দুক্ষেত্রেই দেখা গেছে ভ্যাকসিন দেবার পরে কারুর কোন গুরুতর বাজে সাইড এফেক্ট নেই।অক্সফোর্ড জানিয়েছে যে অনেকেরই গা-হাত-পা ব্যাথা হয়েছে, গা ম্যাজম্যাজ করেছে, জ্বর-জ্বর লেগেছে, মাথা ধরেছে , কিন্তু আর তেমন কিছুই না, আর সে সব প্যারাসিটামল দিলেই সেরে যায়। ক্যানসাইনো'র গবেষণা জানিয়েছে যে গা ব্যথা ছাড়া বেশি ডোজ টিকা দেওয়া কিছু ভলান্টিয়ারের  জ্বর এসেছিল, তবে তা ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।  
ফলাফল - ২ : ভ্যাকসিন কি কাজ করছে ? 
  • টিকা দেবার পরে ELISA ও অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়েছে কোরোনাভাইরাস-বিরোধী এন্টিবডি তৈরী হল কি না।  এবং আনন্দের কথা, দেখা গেছে সবারই ভাল এন্টিবডি তৈরী হচ্ছে। যাঁরা একবার ইনজেকশন পেয়েছিলেন তাঁদের শরীরে ভাল পরিমান এন্টিবডি তৈরী হয়েছে।আর যাঁরা বুস্টার পেয়েছিলেন তাঁদের ৫ গুন্ বেশি এন্টিবডি তৈরী হয়েছে। এই সাফল্য অনসীকার্য। 
  • দুই গবেষণাই অন্য একটি রেসাল্ট'র দিকে দৃষ্টিপাত করতে চেয়েছে। এন্টিবডি জিনিসটার গুরুত্ব অনেকেই জানেন, কিন্তু রোগ প্রতিরোধে এন্টিবডির দোসর T cellর কথা ডাক্তারি ও বৈজ্ঞানিক মহলেই সীমাবদ্ধ। অথচ, এন্টিবডি তৈরী আর T cell activation হল আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বাঁয়া-ডায়া ; আর যে কোন ভাইরাসকে পরাস্ত করতে তো T cell বিশেষ প্রয়োজনীয়।বেশি ডিটেলে যাব না, কিন্তু T cell -বিহীন রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা হল অনেকটা ড্রাইভার-ছাড়া গাড়ি (এইডস রোগে এই T cell  ধ্বংস হয় , আর ফল কি নিশ্চয়ই সবাই জানেন). 
  • ELISPOT assay (কিছুটা ELISAর মত পরীক্ষা, কিন্তু তফাৎ আছে) করে ইংরেজ ও চীনা দুই গবেষক দল জানিয়েছেন যে এই নতুন ভ্যাকসিন T cellদেরও চাঙ্গা করে তুলছে।  এটা একটা বড় খবর এবং এই গবেষণার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য বললে ভুল হবে না।  

  • ব্যাস ! মোটামুটি এই আর কি। অক্সফোর্ড দল নিজেরাই জানিয়েছেন যে ১০০০ জন সাদা চামড়ার ব্রিটিশ তো পরীক্ষার জন্যে যথেষ্ট নয়।  আরো অনেক অনেক লোকের ওপর - বয়স্ক, কিছু অসুখ আগে থেকেই আছে , নানা দেশের নানা গোষ্ঠীর মানুষের ওপর এই সব পরীক্ষা আরো চলবে। সেই জন্যে এর মধ্যেই ইংল্যান্ড তো বটেই, ব্রাজিল আর দক্ষিণ আফ্রিকায় - দুটি দেশেই ভয়ানক মহামারী চলছে - কাজ শুরু হয়ে গেছে। আর  প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ঠিকঠাক হলে তখন বাচ্ছাদের ওপর টেস্ট করতে হবে।  
  • ক্যানসাইনো ও জানাচ্ছেন যে শুধু চীনা লোকের ওপর পরীক্ষা যথেষ্ট নয়। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ওপর পরীক্ষা প্রয়োজন এবং সেটা দীর্ঘকালীন হলেই তবে লঙ টার্ম ইমিউনিটি হল কি না , এবং অন্য কোন উপসর্গ দেখা দিল কি না বোঝা সম্ভব। সেই সব নিয়ে কিছুটা অগ্রগতি হলে তবেই বাচ্ছাদের ওপরে পরীক্ষা হবে।  
  • শুধু তাই না, ক্যানসাইনো'র বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন যে যদি কোন মানুষের আগে কোন এডিনোভাইরাস সংক্রমণ হয়ে থাকে তাহলে তাদের শরীরে এই ভ্যাকসিন কিছুটা কম শক্তিশালী। এন্টিবডি তৈরী হয়, কিন্তু এডিনোভাইরাস সংক্রমণ কোনোদিন হয়নি এমন লোকের থেকে কিছুটা কম।  এই ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ কারন এডিনোভাইরাস সংক্রমণ আমাদের সবারই কম বেশি হয় (প্রচুর এডিনোভাইরাস আছে আকাশে বাতাসে - জ্বর গলা ব্যাথা বা খুশখুশ, পেট খারাপ কত অসুখ নানা এডিনোভাইরাস থেকে হয়, নতুন কিছু না।  সম্ভবত সেই জন্যেই আমাদের শরীর আগে থেকেই এডিনোভাইরাসকে চিনে রেখেছে, এবং এবার এই টিকা দিতে তাকে বন্ধু-নয়-শত্রু ভেবে কিছুটা নিকেশ করে দিয়েছে। এই same-side goal ব্যাপারটা বিজ্ঞানীদের দেখতে হবে।  
ভ্যাকসিন কবে? 
  • নিজেদের ধান্দায় আসি - ভ্যাকসিন কবে পাব? এ বছরের শেষে হয়ত কিছু অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন তৈরী হয়ে ডাক্তার, স্বাস্থ কর্মী এঁদের দেওয়া হবে।তবে, সবার জন্যে আসতে আসতে সামনের বছর। পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ডের ভারতীয় পার্টনার। এর মধ্যেই কাজ শুরু করেছেন।ক্যানসাইনো'র টিকা সম্ভবত তাই করবে, তবে চীনা সেনাবাহিনী এই ভ্যাক্সিনকে 'বিশেষ প্রয়োজনীয় ওষুধ' নাম দিয়েছে, এবং হয়ত এ বছরেই চীনা সৈন্যদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। 
  • এছাড়া,  ব্যবসারও তো ব্যাপার। আজকেই যেমন Astrazeneca আর Modernaর শেয়ার উঠল- নামল। 
  • মনে রাখা আবশ্যক, এখনো কিন্তু কেউ এই সব টিকা দেওয়া ভলান্টিয়ারদের শরীরে আসল কোরোনাভাইরাস দিয়ে দেখেননি আসল রোগ প্রতিরোধ হয় কি না।  সেটা বেশ আলাদা ধরণের challenger পরীক্ষা এবং করা নিয়ে অনেক আইনত এবং নীতিগত বাধা আছে।  দেখা যাক কি হয়।  কিন্তু সময় তো লাগবেই।  বিজ্ঞান তো ম্যাজিকও নয়, তুকতাকও নয়; হড়বড় করলে হিতে বিপরীত হবে ।  
=============== ================== =================== ============

টিকা তো আজ না হয় কাল না হয় সামনের বছর আসবে।  ১০০% না হোক, ভালোই কাজ করবে বলে বিশ্বাস। তবে এখন সবাইকে ভাল করে মাস্ক পড়তেই হবে।  ভাল করে জামা প্যান্ট কাপড় টি শার্ট পড়ে বাড়ি থেকে বেরোন তো? তাহলে ঠিক করে মাস্ক পড়তে অসুবিধে কোথায়? 
মাস্ক প্রসঙ্গে একটা ঘটনা বলি - বিখ্যাত খবরের কাগজ নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রাসঙ্গিক রিপোর্ট দিয়েছে।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে'র  মিসৌরী রাজ্যের স্প্রিংফিল্ড শহরে মে মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম ছিল।  তাই , একটি সেলুনে কর্মরত দুই মহিলা হেয়ারড্রেসার ভেবেছিলেন যে তাঁদের যে হালকা কাশি আর জ্বর হয়েছে সেটা season changeর  আলার্জি থেকে।তাই দুজনেই টেস্ট করতে দিয়েছিলেন কিন্তু কাজেও যাচ্ছিলেন। দুদিন পরে যখন রিপোর্ট এল যে covid পসিটিভ দুজনেই বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি হলেন, কিন্তু ততদিনে সেলুনে আসা  ১৩৯ জন খদ্দের ও ৪ জন সহকর্মী'র সঙ্গে তারা ভাল সময় কাটিয়েছেন !!! আতঙ্কিত স্প্রিংফিল্ড পৌরসভা টেস্ট করতে আরম্ভ করে এবং সবাই অবাক হয়ে দেখেন যে ওই ~১৪০ লোকজনের একজনও আক্রান্ত হননি!! এই দুর্দান্ত সাফল্যের পেছনে একটাই জিনিস আছে - মাস্ক।  দুই মহিলা, এবং ওই সেলুনে আসা সবাই, নিয়ম মেনে ভাল করে ভাল মাস্ক বেঁধেছিলেন।  করোনা ঠেকাতে মাস্ক যে কি প্রয়োজনীয় এই ঘটনা তার বড় প্রমান।  শিক্ষণীয়।  
======================================== =============================


============================= ======================


https://www.thelancet.com/journals/lancet/article/PIIS0140-6736(20)31605-6/fulltext

https://www.bbc.com/news/uk-53469839?fbclid=IwAR3IhSimn-C70kQdkPrvOrpWRnJDwaPqBlFRdegEqp6zBLwA8H7HwnM97ss

https://journosdiary.com/2020/07/20/oxford-coronavirus-vaccine-safe-immunogenic-preliminary-phase1-phase2-trial/?fbclid=IwAR0ZqGVL-SVxs-LHTqJH8bTbI2PrL-tLH_No6AnQR7CfbYM0D4hxt55sLLo

https://journosdiary.com/2020/07/20/phase-2-trial-adenovirus-covid-19-vaccine-ad5-ncov-found-safe-immunogenic/?fbclid=IwAR2whEUJFrLNARx-igPQg0cUjwlGpcIjop8a36FxnkUBleWN_lIBI_CDjnE

https://www.livemint.com/news/world/cansino-coronavirus-vaccine-shows-immune-response-in-human-trial-11595290017877.html

https://www.oxfordstudent.com/2020/05/05/exclusive-100-alive-dr-elisa-granato-first-vaccine-recipient-shares-her-experience/

Thursday, July 16, 2020


করোনা বিজ্ঞানের খুচরো খবর -  ১২
Modernaর ভ্যাকসিন, স্যানিটাইজার 'গন্ডগোল', ইত্যাদি 


১. মার্কিন কোম্পানি Modernaর করোনা-বিরোধী টিকা'র প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা ( Phase 1 trial) সফল হয়েছে। বিখ্যাত গবেষণা পত্রিকা নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা এই কথা জানিয়েছেন।  মে মাসে এই সংস্থা একদম প্রাথমিক সাফল্যের কথা জানিয়েছিল। এবার জানা গেল যে Phase 1 গবেষণায়  ৪৫ জন সুস্থ ভলান্টিয়ারকে দু'বার পরীক্ষামূলক টিকা ইনজেক্ট করা হয়। ফলাফল যাতে ভালভাবে বিশ্লেষণ করা যায় সেই জন্যে টিকার পরিমাণেও তফাৎ রাখা হয়েছিল।  প্রথমবার ভ্যাকসিন দেবার ২৮ দিন পরে দ্বিতীয়বার দেওয়া হয় এবং এখনো পর্যন্ত প্রায় দুমাস ধরে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে ভলান্টিয়ারদের রক্তে কোরোনাভাইরাস-বিরোধী এন্টিবডি ভালো তৈরী হয়েছে। এও উল্লেখযোগ্য যে হালকা মাথাব্যথা, গা- ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি ছাড়া আর কোন বড় সাইড এফেক্ট দেখা যায়নি, এবং তাই বিজ্ঞানীরা এবার পরের পর্যায়ে আরো অনেক লোকের ওপরে টিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন।

সাধারণত ভ্যাকসিন তৈরী হয় জীবাণুকে নির্জীব করে বা তার কোন একটি প্রোটিনকে পরিশোধিত করে। আজ অবধি যত টিকা আছে সবই মোটামুটি এইভাবে তৈরী। তবে , বায়োটেকনোলজির যুগে Moderna এই ভ্যাকসিন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে তৈরী হয়েছে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে RNA ভ্যাকসিন।

স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে আমরা পড়েছি যে আমাদের সবার কোষের নিউক্লিয়াসে যে ক্রোমোসোম আছে তা DNA দিয়ে তৈরী এবং তার ওপর পরপর সাজানো আছে আমাদের জিনগুলি (genes)।  এক একটি জীন আমাদের শরীরের এক একটি প্রোটিন তৈরির নির্দেশাবলী বা code বহন করে। যখন যে প্রোটিন'র দরকার পড়ে সেই জীন তখন active হয়ে ওঠে, সেই জীন'র DNA কপি করে তৈরী হয় একটা RNA আর সেই RNA ব্যবহার করে কোষ সেই প্রোটিনটি তৈরী করে। আজ হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জানে যে মলিকিউলার বায়োলজির পরিভাষায় DNA-থেকে-RNA-থেকে-protein পথ'র নাম Central Dogma of Molecular Biology. এই হল পৃথিবীর সব প্রাণীর সব কোষের অন্যতম বড় কাজ।

Modernaর ভ্যাকসিনে নির্জীব করা কোরোনাভাইরাস নেই, করোনার কোন প্রোটিন নেই। কি আছে? করোনার স্পাইক প্রোটিন ( ছবিতে গোলাকার ভাইরাস থেকে পায়ের মত বেরিয়ে থাকে দেখেছেন নিশ্চয়ই ) তৈরী করার জন্যে নির্দিষ্ট RNA আছে।  এই RNAকে ইঞ্জেক্ট করে দেওয়া হয়েছে মানব দেহে। শরীরের কোষে ঢুকে পড়লে এই ভাইরাল RNA থেকে  তৈরী হয় স্পাইক প্রোটিন, এবং সেই স্পাইক প্রোটিনকে চিনে রাখে আমাদের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা (immune system )।  প্রোটিন বানাবার কাজ শরীরকে আউটসোর্স করে দেওয়া হয়েছে বলতে পারেন।  শরীর নিজেই ভাইরাল প্রোটিন বানাবে আর বানানো হয়ে গেলে শরীরই তাকে চিনে রাখবে।  আশা করা যায় যে আসল ভাইরাস যদি কোনোদিন ঢোকে তাকে এবার দ্রুত চেনা যাবে এবং বধ করা যাবে - ঠিক অন্য টীকায় যেমন হয়।


RNA ভ্যাকসিন তৈরী করা সোজা এবং এর জন্যে আলাদা করে জীবাণু বা তার প্রোটিন বানাতে হয় না বলে বিজ্ঞানীদের আশা  ভবিষ্যতে ভ্যাকসিন তৈরীর কাজ আরো দ্রুত হবে। অবশ্য, এ একদম নতুন টেকনোলজি ; আগে কখনো ব্যবহৃত হয়নি।  তাই ভাল রকম পরীক্ষা করা হচ্ছে। সামনে বছরের গোড়ায় বাজারে টিকা ছাড়তে পারবে বলে Moderna জানিয়েছে (দাম কত করবে ?? জানি না!) ; ব্যবসা ও বিজ্ঞানের সাফল্য দুই লক্ষ্য থাকলেও ফালতু লোক-দেখানো তাড়াহুড়োর কোন জায়গা নেই। 

আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন 'প্রতিযোগিতায়' অবশ্য এখনো এগিয়ে চীনের কোম্পানি CanSino Biologics. চীনের একাডেমি অফ মিলিটারি মেডিক্যাল সায়েন্সর সঙ্গে একযোগে তাঁদের ভ্যাকসিন phase II পর্যায়ে পেরিয়ে গেছে। প্রজেক্টের সাফল্য দেখে চীনা সেনাবাহিনী একে 'জরুরি ওষুধ' বলে অভিহিত করেছেন এবং সম্ভবত এ বছরের শেষে চীনের সৈন্যরা এই টিকা ব্যবহার করতে পারবেন।

https://www.nejm.org/doi/full/10.1056/NEJMoa2022483?fbclid=IwAR1hGII8NpMaWWS1JuCtGbbUYtNC18WC7A6IeKJm6nnA_UJBo-luO_ID9lM
--------------- ----------------------------------------- -----------------

২. বাজারে আসা অনেক স্যানিটাইজার যে ভাল নয়, বরং ক্ষতিকারক হতে পারে এ কথা পঞ্জাবের Food and Drug Administration দপ্তর জানিয়েছে। Caravan পত্রিকা জানাচ্ছে যে জুলাই মাসের গোড়ায় প্রকাশিত  রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ৬৩টি স্যানিটাইজার পরীক্ষা করা হয়েছিল।  তার মধ্যে ৩৬টি জীবাণু মারতে কার্যকর হবে না, এবং ৪টিতে বিষাক্ত মিথানল পাওয়া গেছে!

এতে খুব একটা অবাক হবার কিছু নেই।  প্রচুর স্যানিটাইজারে বাজার ছেয়ে গেছে সবাই দেখতে পারছেন। আমাদের দেশে যে সব কিছুর কোয়ালিটি কন্ট্রোল হবে না সেটা বলে দিতে হয় না।  আর যে দেশে বিষাক্ত মদ খেয়ে প্রতি বছর বহু মানুষ প্রাণ হারান সে দেশে কেউ কেউ সানিটাইজারে ইথানলের জায়গায় মিথানল মেশাবেন তাতে খুব অবাক হবার কিছু আছে কি? তাহলে উপায়? ভাল কোম্পানির স্যানিটাইজার দেখে শুনে কিনবেন। আর তাছাড়া,  সাবান দিয়ে হাত ধোয়া তো সবচেয়ে ভাল।আজ অবধি এমন  কোন স্যানিটাইজার বেরোয়নি যা কষ কষ করে সাবান জল দিয়ে হাত ধোয়ার থেকে ভাল।

https://caravanmagazine.in/health/with-no-government-oversight-profiteering-industries-flood-indian-markets-with-toxic-sanitisers
 ------------------------------------- -----------------------------------------

৩. একটা ছোট্ট কথা বলে শেষ করি।সবাই তো ভ্যাকসিন ওষুধ ভেন্টিলেটর নিয়ে ভেবে ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছেন না।
কিন্তু, এ প্রসঙ্গে শারীরবিদ্যা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গোড়ার একটা কথা মনে করিয়ে দিই।

শরীরে জীবাণু ঢুকলে তাকে মারতে কোষদের (যেমন রক্তের শ্বেতকণিকা) কি লাগে? এনার্জি।
জীবাণুর বিরুদ্ধে আন্টিবডি তৈরী করতে কি লাগে? এনার্জি।
টিকা নিলে যাতে সেটা জীবাণুকে ঠিকঠাক চিনতে সাহায্য করে তার জন্যে কি লাগে? এনার্জি।
ওষুধ শরীরে ঢুকলে তাকে ঠিকঠাক কোষে পৌঁছে দিতে এবং অনেক সময় সেই ওষুধকে active করতে কি লাগে? এনার্জি। ... ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই এনার্জি শরীর পায় কোথা থেকে? খাবার থেকে। পুষ্টিকর পর্যাপ্ত খাবার।

তাই এত এত ওষুধ/ভ্যাকসিন/ হাসপাতাল বিশেষ কাজে আসবে না একটি জিনিস কমতি পড়লে-  পুষ্টিকর পর্যাপ্ত খাবার।মনে রাখতেই হবে, টিকা বা ওষুধ শরীরকে সাহায্য করে জীবাণুকে পরাস্ত করতে, কিন্তু আসল লড়াই লড়ে শরীর নিজে। শরীর নিজেই সৈন্য, টিকা বা ওষুধ তার হাতের হাতিয়ার। শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা'র  মুলে হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমানে কার্বোহাইড্রেট + প্রোটিন + ফ্যাট + ভিটামিন + জল + ইত্যাদি নিয়ে খাওয়া। ওই জ্বালানি না পেলে ইঞ্জিন চলবে না। তাই আজ কোটি কোটি ভারতবাসী  যদি আধপেটা খেয়ে থাকেন তাহলে রোগ অনেক দ্রুত ছড়াবে। দুর্বল, অভুক্ত শরীরে অনেক সহজেই বাসা বাঁধে ভাইরাস, ছড়িয়েও পড়ে।

ভাল থাকবেন। সাবধানে থাকবেন কিন্তু আতঙ্কিত হবেন না, তাতে কোন এক্সট্রা লাভ নেই ।
মাস্ক ভাল করে পরবেন।  

Tuesday, July 14, 2020

RUSSIAN VACCINE? REALLY? HOLD ON

There is no Russian vaccine as yet. The Gam-Covid-Vac Lyo vaccine being developed by Moscow's Gamaleya Research Institute  has completed only phase 1 trials.

The detailed report from WHO's 'draft landscape of covid-19 candidate vaccines clearly states - 'An open two stage non-randomized Phase 1 study with the participation of healthy volunteers. This clinical trial is an open study of safety, tolerability and immunogenicity of the drug "Gam-COVID-Vac ", ly solution for intramuscular administration, with the participation of healthy volunteers.'


And that is identical to the vaccine update by noted columnist Carl Zimmer in NYT.

Also, the completion dates are clearly written - 5th august and 15th august. (btw, there is a mention of phase 2 there, so its not impossible the 1st and 2nd phases will be combined....thatz ok. nothing unusual, in fact most vaccine porjects are fusing phases 1 and 2 today)

To conclude, a good part of the first phase of experiments have been completed. The next stages start sometime next month. 

How did this go viral? First, a too-brief-and-messy report in Sputnik News, then the picking and shitty exaggeration of it by several media portals and opps! there you have another example of the  Infodemic! Thanks to some news reports which, a day later, reported correctly.


Monday, July 13, 2020

সত্যিই কি রাশিয়ায় ভ্যাকসিন তৈরী হয়েছে ?


এক একটা খবর এমন দুম করে আসে যে এই হাজারটা ব্রেকিং নিউজের যুগেও পিলে চমকে যায়. যেমন, পরশু দিন হঠাৎ বাংলা হিন্দি ইংরিজি সব চ্যানেল, ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ  ইন্টারনেট পোর্টাল সবাই বলতে আরম্ভ করল যে রাশিয়ায় নাকি কোরোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা তৈরী হয়ে গেছে। গত দুদিনে বেশ কয়েকজন আমায় এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস ও করেছেন।

খবর-টা আপাত আনন্দদায়ক হলেও বৈজ্ঞানিক দিক থেকে অবিশ্বাস্য। একটা টিকা তৈরীর সময় অনেক সাবধানে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়, এবং সেগুলি অন্তত ৩টি Phase (পর্যায় ) ভাগ করা থাকে। এবং অত্যন্ত ফাস্ট ট্র্যাক করলেও সেগুলোর বেশ কিছুটা সময় লাগবেই।সোজা করে ভাবুন না - একটা নতুন ভাইরাস। মাত্র ৬ মাস আগে তার অস্তিত্বর কথা আমরা জেনেছি। প্রথমে বিজ্ঞানীরা তাকে স্টাডি করবেন নানা ভাবে, তারপর ঠিক করবেন কিভাবে ভ্যাকসিন তৈরী করলে ফল পাওয়া যাবে, তারপর সেই মালমশলা তৈরী হবে, তারপর ইঁদুর বাঁদরদের ওপর পরীক্ষা হবে ; তারপর কম সংখ্যক স্বেচ্ছা সেবকদের ওপর টেস্ট হবে দেখা হবে ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে কি না, কোন সাইড এফেক্ট বা এলার্জি হচ্ছে কি না; তারপর আরো অনেক মানুষের ওপর টেস্ট করা হবে , সেই সব ফলাফল আসবে সেগুলো বিশ্লেষণ হবে - 'উঠলো বাই ভ্যাকসিন চাই' করলেই হয় না কি ? মামার বাড়ির আবদার?

আর সেই জন্যেই গত সপ্তাহে যখন খবর আসে যে হায়দারাবাদের ভারত বায়োটেক কোম্পানি না কি ১৫ই অগস্টের মধ্যে বাজারে টিকা আনতে যাচ্ছে, তখন সারা দেশের বিজ্ঞানী আর ডাক্তার মহল চিন্তায় পরে গিয়েছিলেন। অনেকে প্রতিবাদও করেছেন, ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্স লিখিত আপত্তি জানিয়েছে। আর তাই এবার যখন মিডিয়ায় যখন হুট্ করে রাশিয়ার ভ্যাকসিনের কথা এল সবাই আরো চমকে গেলেন।

আরো কারণ ছিল।  WHO র নিজস্ব লিস্ট আছে যাতে দেখা যায় এখন পৃথিবীর নানা গবেষণাগারে যে ১৪৫টির বেশি করোনা ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চলছে সেগুলি পরীক্ষার কোন পর্যায়ে আছে।  এসব তো আর গোপন খবর নয়, বিজ্ঞানীরা এসব জনসমক্ষেই রাখেন। আর সেই লিস্টেই আছে যে মস্কোর গামালেয়া রিসার্চ ইন্সিটিটিউট যে Gam-COVID-Vac ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছেন সেটি phase 1এ আছে।


 তাছাড়া বিখ্যাত বিজ্ঞান লেখক কার্ল জিমার ভ্যাকসিন গবেষণা নিয়ে প্রায়ই নতুন খবর update দিচ্ছেন এবং এক সপ্তাহ আগে তিনিও একই খবর দিয়েছিলে - গামালেয়ার টিকা প্রথম পর্যায়'র কাজ জুন মাসে শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক প্রশ্ন - হঠাৎ কি করে ভ্যাকসিন তৈরী হয়ে গেল??? কিছু একটা দাবি করলেই হল??

অনেকেই এ নিয়ে সন্দেহ করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মজা করেছেন। কিন্তু, একটু তলিয়ে দেখলেই দেখা যেত যে রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা 'ভ্যাকসিন তৈরী' এমন কোন দাবিই করেননি। কেন করবেন? তাঁদের কি ভীমরতি হয়েছে? পলিটিক্সকে দুমদাম বলে ছাড় পাওয়া যায় (আজকাল বেশিই যায় হয়ত), কিন্তু বিজ্ঞানে যায় না।

তাহলে? আর কি - ভুল রিপোর্টিং! সম্ভবত trpর দৌড়ে ভেরিফাই না করে হড়বড় করে খবর পরিবেশন করতে গেলে যা হয়।

তাহলে ঠিক খবর কি?
 রাশিয়ার ইনস্টিটিউট জানিয়েছে যে তাঁদের phase 1র বেশ গবেষণা শেষ হয়েছে। ৩৮ জন ভলান্টিয়ারের ওপর পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং ফলাফল সন্তোষজনক। মূল কথা হচ্ছে phase 1. ওদের রিপোর্ট স্পষ্ট জানাচ্ছে এই পর্যায় ছিল  An open two stage non-randomized Phase 1 study with the participation of healthy volunteers. This clinical trial is an open study of safety, tolerability and immunogenicity of the drug "Gam-COVID-Vac ", ly solution for intramuscular administration, with the participation of healthy volunteers.


শুধু তাই নয়, রিপোর্ট এও পরিষ্কার বলছে যে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১৮ই জুন (সেটা সব খবর ঠিক বলেছে ) , আর এই পর্যায়ের সব ফলাফল বের করতে ৫ই বা ১৫ই অগস্ট অবধি লাগবে। 


অবশ্য ওই রিপোর্টে এক জায়গায় phase 1 আর phase 2 কথাদুটি পাশাপাশি আছে।  সেটার মানে ঠিক বলতে পারব না, তবে অনেক ক্ষেত্রেই দুটো phaseকে সময় বাঁচাতে জুড়ে দেওয়া হয়।  নতুন কিছু না, বিশেষত করোনা ঠেকাতে প্রায় সবাই এটা করছেন। মনে হয়,  এঁরাও ফলাফল পর্যালোচনা করে সেটা করতে পারেন। 


এই হল বিজ্ঞানীদের কথা।  মিডিয়ায় এই ভুল রিপোর্ট করল কে? 
সম্ভবত রুশ সংস্থা স্পুটনিক নিউজ যে রিপোর্ট করেছিল তাতে ব্যাপারটা অত স্পষ্ট করে বলা নেই।  বিশেষত তার হেডিং বেশি গন্ডগোলে  - এই যে 'Russia's Sechenov University Successfully Completes Trials of World's 1st COVID-19 Vaccine'. বুঝতেই পারছেন, trials যে শুধু phase 1 trial সেটা না লিখেই গন্ডগোলের সূত্রপাত। 


তবে তার পরে এত এত সাংবাদ সংস্থা কেন একটু ডবল চেক না করে লাফালাফি করলেন কে জানে? কোন মানে হয়?!  অবশ্য, এটাও ঠিক এক-দুদিন দেরি হলেও কয়েকজন সাংবাদিক সঠিক রিপোর্ট করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ। 

যাই হোক, মোদ্দা কথা রুশ বিজ্ঞানীরা শুধু phase ১র প্রাথমিক সাফল্যের কথাই বলেছেন। সেটাই বৈজ্ঞানিক সত্য, বাকি সাব বাকওয়াস হয় । প্রচুর চাপ থাকলেও বেশিরভাগ বিজ্ঞানী আজও বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই চলেন। ভ্যাকসিন আসতে সামনের বছর।  

https://www.who.int/publications/m/item/draft-landscape-of-covid-19-candidate-vaccines

https://clinicaltrials.gov/ct2/show/study/NCT04436471?term=vaccine&cond=covid-19&draw=4

https://clinicaltrials.gov/ct2/show/record/NCT04437875?term=vaccine&cond=covid-19&draw=4

https://sputniknews.com/russia/202007121079860277-russias-sechenov-university-successfully-completes-trials-of-worlds-1st-covid-19-vaccine/

https://www.theweek.in/news/world/2020/07/13/did-russian-covid-19-vaccine-complete-clinical-trials-or-phase-i-trials.html

 স্কুল খুলুক, সঙ্গে হাওয়া বাতাস খেলুক ক্লাসঘরে ('এই সময়' সংবাদপত্রে প্রবন্ধ -  ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২১)      সোজাসাপ্টা অপ্রিয়   সত...